ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

পেকুয়ায় ওসি ও ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী জনতার পোস্টারিং!

পেকুয়া সংবাদদাতা : pekua-1
পেকুয়ায় সদ্য কারাগারে পাঠানো মগনামা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আবুল কাসেমের মুক্তির দাবিতে এলাকায় সাটানো হয়েছে পোষ্টারিং। তার নিঃশর্ত মুক্তি, অস্ত্র ও ইয়াবাসহ আটকের ঘটনায় নিরপেক্ষ ও বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়ে ওই পোষ্টার মগনামা ইউনিয়নসহ সর্বত্রে সাটানো হয়েছে। মগনামা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও ইউনিয়ন যুবলীগের পক্ষ থেকে পোষ্টার বিলি করা হয়েছে। পোষ্টারে মগনামার দেয়ালে দেয়ালে ছেয়ে গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক ও ইন্টারনেটেও শুভা পেয়েছে এ পোষ্টার। প্রতিবাদি জনতার পক্ষে ওই ঘটনাকে ন্যাক্কারজনক,বর্বরোচিত আখ্যায়িত করে সাজানো পৃথক মামলা থেকে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আবুল কাসেমকে অব্যহতি চাওয়া হয়েছে। কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্টে থাকা ওই নেতার ছবি সম্বলিত পোষ্টারে এ ঘটনার জন্য পেকুয়া থানার ওসি জিয়া মো.মোস্তাফিজ ভুঁইয়া, মগনামা ইউপির চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম ও এসআই কামরুল হাসানকে সরাসরি দায়ি করা হয়েছে।
এদিকে ইয়াবা ও অস্ত্রসহ স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আবুল কাসেম আটকের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সর্বত্রে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠে মগনামায়। তার গ্রাম মিয়াজিপাড়ার লোকজন এ ঘটনায় অত্যন্ত মর্মহত ও ক্ষুব্ধ হন। আটকের পর সমাজ কমিটি ও এলাকাবাসিরা মিয়াজিপাড়া বায়তুর রহমান জামে মসজিে বৈঠকে মিলিত হন। মগনামার বিভিন্ন পাড়া ও মহল্লার মানুষ এ ঘটনায় ফুঁসে উঠেন। কয়েকদিন পর যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগ তার নিঃর্শত মুক্তির দাবিতে এ পোষ্টার এলাকায় সাটাই করে।
এদিকে লাগানো পোষ্টার চেয়ারম্যান ওয়াসিম তার অনুগত লোক ও ক্যাডার দিয়ে বিভিন্ন স্থান থেকে ছিড়ে ফেলানো হচ্ছে। খোদ পেকুয়া থানা পুলিশের ওসি ও ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে এহেন পোষ্টারিংয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে গত কিছুদিন পুর্বে মগনামা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আবুল কাসেমকে অস্ত্র ও ইয়াবা দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম পুলিশে দিয়েছে। এ ঘটনার পেকুয়া থানায় অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য আইনে পৃথক দু’টি মামলা হয়েছে।
এদিকে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আবুল কাসেমকে অস্ত্র ও ইয়াবাসহ আটকের ঘটনায় মগনামায় সর্বত্রে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আবুল কাসেমের স্ত্রী অভিযোগ করেছেন গত ইউপি নির্বাচনের পর থেকে ওয়াসিম তার স্বামীকে ফাঁসানোর চক্রান্ত করছিল। অবশেষে পেকুয়া থানার ওসি ও এসআই কামরুল হাসানকে মোটা অংকে ম্যানেজ করে চেয়ারম্যান ওয়াসিম আমার স্বামীকে অস্ত্রও ইয়াবা দিয়ে জেলে পাঠিয়েছে।
এদিকে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা আবুল কাসেমকে ইউপি চেয়ারম্যান কর্তৃক সাজানো মামলায় কারাগারে প্রেরনের ঘটনায় এলাকায় সর্বত্রে সমালোচনার ঝড় বইছে। সরেজমিন মগনামার বিভিন্ন এলাকায় পরিদর্শন করে দেখা গেছে স্বেচ্ছাসেবকলীগ মগনামা ইউনিয়ন শাখার সিনিয়র সদস্য আবুল কাসেম এর নিঃশর্ত মুক্তি চেয়ে ব্যাপক পোষ্টারিং সাটানো হয়েছে। মগনামার সর্বস্থরের প্রতিবাদি জনতা ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগ-যুবলীগ কৃর্তক প্রকাশিত ও প্রচারিত পোষ্টারিংয়ে উল্লেখ করা হয়েছে মগনামা ইউনিয়নে ধানের শীষ প্রতিকের নির্বাচিত কুখ্যাত চেয়ারম্যান ও যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদন্ডাদেশ প্রাপ্ত জামায়েত নেতা মীর কাসেম আলীর ঘনিষ্ট সহচর ইউপি চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ ওয়াসিম (ওয়াছিম হাজ্বি) ক্যারিশম্যাটিক পরিকল্পনায় পেকুয়া থানার ঘুষখোর ওসি জিয়া মো.মোস্তাফিজ ভুঁইয়া এবং এসআই কামরুলের যৌথ যোগসাজসে অত্যাচার ও নির্যাতনের শিকার মুজিবীয় রনাঙ্গনের অকুতভয় রাজপথ কাঁপানো সৈনিক মগনামা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সিনিয়র সদস্য আবুল কাসেমের বিরুদ্ধে পৃথক অস্ত্র ও ইয়াবা দিয়ে প্রশাসনের সাজানো দু’টি মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ নিঃশর্ত মুক্তি চাওয়া হয়েছে।
এছাড়া ওই পোষ্টারে আরো উল্লেখ করা হয়েছে স্বেচ্ছাসেকবলীগ নেতা আবুল কাসেমকে মিথ্যা মামলা দিয়ে সাজানোর ঘটায় পেকুয়া থানার ঘুষখোর ওসি জিয়া মো.মোস্তাফিজ ভুঁইয়া এবং এসআই কামরুলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত ও বিচার চাই। স্থানীয় কুখ্যাত ইয়াবা ব্যাবসায়ী চেয়ারম্যান ওয়াছিম হাজ্বির বিরুদ্ধে সুষ্ট, নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচার চাই’। জানা গেছে পেকুয়া থানার ওসি সহ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে পোষ্টারিংয়ের পর এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিতে সরকারি বিভিণœ গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন।
পেকুয়া থানার ওসি ও ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে পোষ্টারিংয়ের বিষয়ে জানতে মগনামা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি সোলতান মুহাম্মদ রিপনের সাথে যোগাযোগ করা হয়। তিনি জানান ওয়াসিম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে মগনামায় আওয়ামীলীগ নিধন মিশনে মেতেছেন। পেকুয়া থানার ওসি মোস্তাফিজ মিশন বাস্তবায়নে ওয়াসিমের সাথে হাত মিলিয়েছেন। তার যেমন নাম তেমন কাজ। মৃত্যুদন্ড কার্যকর মীর কাসেম আলীর অনুচর ওয়াসিমের সাথে একাট্টা হয়ে ওইদিন আমাদের নেতা আবুল কাসেমকে অস্ত্র ও ইয়াবা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে। অস্ত্র ও ইয়াবা ওয়াসিমের। ওয়াসিম তার অনুগত ভাড়াটে লোক দিয়ে লাগানো পোষ্টারগুলো গত কয়েকদিন ধরে উঠিয়ে ফেলছে। ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মো.রোকন উদ্দিন জানায় এলাকায় সাধারন মানুষ ফুঁসে উঠেছে। একজন নিরাপরাধ ছেলেকে ওয়াসিম পুলিশকে ম্যানেজ করে এ ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে। উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি ওসমান গনি এমইউপি জানায় এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। আবুল কাসেম আমাদের কর্মী। তাকে অন্যায়ভাবে ফাঁসানো হয়েছে। ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান খাইরুল এনাম জানায় আবুল কাসেমের প্রতি অবিচার করা হয়েছে। তাকে অস্ত্র ও ইয়াবা দিয়ে ওয়াসিম পুলিশে দিয়েছে।
এ ঘটনায় আ’লীগসহ সর্বস্তরের মগনামাবাসি চরমভাবে ব্যতিত ও ক্ষুব্ধ হয়েছেন। প্রতিবাদি মানুষ আবুল কাসেমের মুক্তির দাবিতে এলাকায় পোষ্টার বিলি করেছেন বলে আমিও শুনেছি। মগনামা ইউপির চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম জানায় পোষ্টারের বিষয়টি শুনেছি। তবে আমি দেখেনি। পেকুয়া থানার ওসি জিয়া মো.মোস্তাফিজ ভুঁইয়া জানায় এটি বিচার প্রক্রিয়াকে বাধা গ্রস্ত করার অপপ্রয়াস। আমি এ মাত্র শুনেছি পোষ্টারের কথা। আপনারা লিখেন। আমারটা আমি করব। আপনারা আগেও লিখেছেন। এখন আমি সোজা পার্টি অফিসে চলে যাব।

পাঠকের মতামত: